Ads

কামরূপ কামাখ্যার আসল রহস্য ফাঁস | History Of Kamrup Kamakhya


কামরূপ কামাখ্যার আসল রহস্য ফাঁস

কামরূপ কামাখ্যার আসল রহস্য ফাঁস 



কামরূপ-কামাখ্যা নামটা যে কোন বাঙালির খুব পরিচিত। অন্য কোন কারণে নয় এই জনপদ নিয়ে বিভিন্ন গল্প কাহিনী রয়েছে।

এক সময় এই জায়গায় গেলে কেউ আর ফিরে আসত না। হাজার বছরের রহস্যময় এই স্থান কামরূপ-কামাখ্যা। এখনো যাদুবিদ্যা সাধনার জন্য বেছে নেয়া হয় কামাখ্যা মন্দির কেই। কথিত আছে কামাখ্যা মন্দিরের ডাকিনী যোগিনী থাকে যারা যাদুবিদ্যায় পারদর্শী। এমন অনেকের কাছে শুনেছি যে পুরুষেরা অনেক সময় কৌতূহলবশত তন্ত্র মন্ত্র শেখার জন্য যায়। কিন্তু সেখান থেকে মন্ত্র শেখার পর বের হবার কোন রাস্তা খুঁজে পায় না। 

বহু সাধনার পর হয়তবা পথ খুঁজে বের হয়ে আসতে পারে কেউ তাও পারে না।

 

যারা বের হয়ে আসেন তারা অনেক বড় তান্ত্রিক হয়ে যান সাধনা বলে। কামরূপ কামাখ্যা সম্পর্কে অনেক তথ্য হয়তো আপনি শুনেছেন বৃদ্ধ কারো কাছ থেকে। আপনি হয়তো কখনো প্রচন্ড ভীতু হয়েছেন আবার কখনো প্রচন্ড আগ্রহ নিয়ে বিরামহীন শুনেছেন সেসব কাহিনী। তবে নিশ্চয়ই এই সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আগ্রহ আছে আরও অনেক জানা-অজানা রহস্যে ঘেরা এই জায়গাটি নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন চলুন শুরু করি। 

 

সনাতন ধর্মের অনুসারীরা এটা বিশ্বাস করে যেটা পুরাণে আছে। কামরূপ-কামাখ্যা হচ্ছে সতীর মৃত্যু ঘটলে তার স্বামী শিব ঠাকুর সতীকে কাঁধে করে নৃত্য করতে থাকে। 

নৃত্য তান্ডবে তার দেহের বিভিন্ন অংশ খণ্ড-খণ্ড আকারের খুলে পড়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বা প্রজনন অঙ্গ ভারতের আসাম রাজ্যের গোহাটি শহরে এই নীলাচল পর্বতে পরে। একদিন কামদেবতা তার স্ত্রীর সাথে নীলাচল পর্বত ঘুরতে আসে আর এসে পেয়েযায় সতীর জনি। তারা প্রবল ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে সতীর জনি মন্ডলের পূজা করতে থাকেন। 

অবশেষে কামদেব অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে তার রূপ ফিরে পান পরবর্তীতে কামদেবের নাম অনুসারে অঞ্চল টির নাম করা হয় কামরূপ আর শিব পত্নী আরেক নাম কামাখ্যা দুটি নাম মিলে জায়গাটির নাম হয় কামরূপ কামাখ্যা।

 
 কামরূপ কামাখ্যার আসল রহস্য ফাঁস | History Of Kamrup Kamakhya

 

অনেকেই বলে থাকে কামরূপ-কামাখ্যা ভারতের থেকে দূরে একটা দিপ কিন্তু তা ঠিক না। আসামের গুয়াহাটি স্টেশন থেকে পাহাড়ি এক রাস্তা ধরে যেতে হয় সেখানে। 

ভারতের আসামের কামরূপ জেলার নীলকন্ঠ পাহাড়ের চূড়ায় এক প্রাচীন মন্দিরের সন্ধান মেলে এই প্রচিন মন্দির কামাক্ষা দেবীর মন্দির নামে পরিচিত। কামরূপ-কামাখ্যা আশেপাশের অরণ্য আর নির্জন পথে নাকি ঘুরে বেড়ায় ভালো-মন্দ আত্মারা। এখানে রয়েছে সারি সারি পর্বতমালা আর ঠিক পাশেই ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রে মা কামাখ্যার মন্দির। 

মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ ভক্তদের নৃত্যগীত। তবে সবকিছু ছাপিয়ে কামাখ্যা জাদুবিদা আর সাধ্ক দের অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা গল্প সবার মুখে মুখে। 

 

আসলেই কি কোন খমতা আছে তাদের নাকি কেবলই গল্প সেখানে লুকানো রহস্য রোমাঞ্চ আর গল্প কথা কামরূপ-কামাখ্যা নারী শাসিত পাহাড়ি ভূখণ্ড যৌবনবতী নারীদের রাজত্ব চলে এখানে। এই যৌবনবতী নারীরা পুরুষদের জাদুর মাধ্যমে ক্রীতদাস করে রাখে এছাড়াও সেখানে আছে বিশাল সিংহ যাকে ডাকে ফেটৈ চৌচির হয়ে যায় পুরুষের অন্ডকোষ।

 দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে সেখানে যেতে হয় যে ফিরে আসতে পারে সে হয় জাদুকর অনেক অসাধ্যকে সে করতে পারে সাধন। 

 


 

কামাখ্যা মন্দিরের চারটি কক্ষ আছে গর্ভগৃহ ও তিনটি মন্ডপ গর্ভগৃহ। আসলে ভূগর্ভস্থ একটি গুহা এটি ছোট ও অন্ধকারাচ্ছন্ন  সরু খারা সিরি পেরিয়ে এখানে পৌঁছাতে হয়। 

ভিতরে ঢালু পাথরের একটি খন্ড আছে যেটি যোনির আকৃতি বিশিষ্ট। এটিতে প্রায় ১০ইঞি গভীর একটি গর্ত দেখা যায় একটি ভূগর্ভস্থ প্রস্রবনের জল বেরিয়ে এই গভটি সব সময় ভর্তি রাখে। এবং এই গর্তটি দেবি কামাখ্যা নামে পুজিত। কামাখ্যা মন্দির চত্বরে অন্যান্য মন্দিরগুলোতে একই রকম যোনির আকৃতি বিশিষ্ট পাথর দেখা যায় যার ভূগর্ভস্থ প্রস্রবনের জলদারা পূর্ন থাকে।

 

কামাখ্যা মন্দির একটি বিশেষ কারণে জগৎখ্যাত আর এই বিশেষ কারণটি হলো। এখানে প্রতিবছর বর্ষাকালে অম্বুবাচী মেলা আয়োজন করা হয় বর্ষাকালে কামাখ্যা মন্দিরের মুলবেরি হতে নিরন্তর জলের প্রবাহ বইতে থাকে। ৩ দিনের জন্য এই জলধারা লাল বর্ণ ধারণ করে কথিত আছে এই লালবর্ণ কামাখ্যা মায়ের ঋতুস্রাব। তবে ইন্টারনেট থেকে আমরা এটা জানতে পেরেছি যে এই সময় মূল গর্ভগৃহের জল আয়রন অক্সাইড এর প্রভাবে লাল থাকে ফলে এটিকে ঋতুস্রাব মত দেখতে হয়। তবে যাই হোক এই তিন দিনের জন্য মন্দিরের মূল ফটক বন্ধ থাকে তখন সকলের জন্যই মন্দিরে ঢোকা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। 

 

একবার এক পুরোহিত নিয়ম অমান্য করে মন্দিরে ঢুকলে সাথে সাথে তার দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। ঋতুস্রাব অবস্থায় মা কারো সাথে দেখা করেন না তবে মূল ফটকের বাইরে অম্বুবাচী মেলা উৎসব ও অন্যান্য পূজা-অর্চনা চলতে থাকে। এর মধ্যে একটি হল আহার পূজা অনেকেই বেশ কয়েক ঘন্টা দাড়িয়ে পূজা সারেন।এই মন্দিরে দেবীর কাছে প্রার্থনা নিয়ে দূর দুর্দান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসেন। 

মনস্কামনা পূর্ণ হলে তারা ঘন্টা বেঁধে যায়। পূড়বে এখানে নরবলি বিশেষ করে কুমারী বলি দেয়া হতো বলে জানা যায়। 

বর্তমানে মহিষ ছাগল ও ভেড়া  বলি দেয়া হয়। বন্ধুরা কামরূপ-কামাখ্যা সম্পর্কে জেনে কেমন লেগেছে তা জানাতে ভুলবেন না আর এমন জানা-অজানা মজার এবং অদ্ভুত সব বিষয় জানতে বলে বাটনটি প্রেস করুন ধন্যবাদ!



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ